সুরাহ হুদ
وَأُوحِيَ إِلَىٰ نُوحٍ أَنَّهُ لَن يُؤْمِنَ مِن قَوْمِكَ إِلَّا مَن قَدْ آمَنَ فَلَا تَبْتَئِسْ بِمَا كَانُوا يَفْعَلُونَ
﴾৩৬) নূহের প্রতি অহী নাযিল করা হলো এ মর্মে যে, তোমার কওমের মধ্য থেকে যারা ইতিমধ্যে ঈমান এসেছে, তারা ছাড়া এখন আর কেউ ঈমান আনবে না৷ তাদের কৃতকর্মের জন্য দুঃখ করা পরিহার করো৷
وَأُوحِيَ إِلَىٰ نُوحٍ أَنَّهُ لَن يُؤْمِنَ مِن قَوْمِكَ إِلَّا مَن قَدْ آمَنَ فَلَا تَبْتَئِسْ بِمَا كَانُوا يَفْعَلُونَ
﴾৩৬) নূহের প্রতি অহী নাযিল করা হলো এ মর্মে যে, তোমার কওমের মধ্য থেকে যারা ইতিমধ্যে ঈমান এসেছে, তারা ছাড়া এখন আর কেউ ঈমান আনবে না৷ তাদের কৃতকর্মের জন্য দুঃখ করা পরিহার করো৷
وَاصْنَعِ الْفُلْكَ بِأَعْيُنِنَا وَوَحْيِنَا وَلَا تُخَاطِبْنِي فِي الَّذِينَ ظَلَمُوا ۚ إِنَّهُم مُّغْرَقُونَ
৩৭)
এবং আমার তত্ত্বাবধানে আমার অহী অনুযায়ী একটি নৌকা বানানো শুরু করে দাও৷
আর দেখো যারা জুলুম করেছে তাদের জন্য আমার কাছে কোন সুপারিশ করো না, এরা
সবাই এখন ডুবে যাবে৷ ৪০
وَيَصْنَعُ
الْفُلْكَ وَكُلَّمَا مَرَّ عَلَيْهِ مَلَأٌ مِّن قَوْمِهِ سَخِرُوا
مِنْهُ ۚ قَالَ إِن تَسْخَرُوا مِنَّا فَإِنَّا نَسْخَرُ مِنكُمْ كَمَا
تَسْخَرُونَ
৩৮) নূহ যখন নৌকা র্নিমাণ করছিল তখন তার কওমের সরদারদের
মধ্যে থেকে যারাই তার কাছ দিয়ে যেতো তারাই তাকে উপহাস করতো৷ সে বললো, “যদি
তোমরা আমাকে উপহাস করো তাহলে আমিও তোমাদের উপহাস করছি৷
فَسَوْفَ تَعْلَمُونَ مَن يَأْتِيهِ عَذَابٌ يُخْزِيهِ وَيَحِلُّ عَلَيْهِ عَذَابٌ مُّقِيمٌ
৩৯)
শিগ্গীর তোমরা জানতে পারবে কার ওপর লাঞ্ছনাকর আযাব নাযিল হবে এবং কার ওপর
এমন আযান নাযিল হবে যা ঠেকাতে চাইলেও ঠেকানো যাবে না৷
حَتَّىٰ
إِذَا جَاءَ أَمْرُنَا وَفَارَ التَّنُّورُ قُلْنَا احْمِلْ فِيهَا مِن
كُلٍّ زَوْجَيْنِ اثْنَيْنِ وَأَهْلَكَ إِلَّا مَن سَبَقَ عَلَيْهِ
الْقَوْلُ وَمَنْ آمَنَ ۚ وَمَا آمَنَ مَعَهُ إِلَّا قَلِيلٌ
৪০) অবশেষে যখন আমার হুকুম এসে গেলো এবং চুলা উথলে উঠলো ৪২ তখন আমি বললাম, “সব ধরনের প্রাণীর এক এক জোড়া নৌকায় তুলে নাও৷ নিজের পরিবারবর্গকেও- তবে তাদের ছাড়া যাদেরকে আগেই চিহ্নিত করা হয়েছে - এতে তুলে নাও এবং যারা ঈমান এনেছে তাদেরকে এতে বসাও৷ ৪৪ তবে সামান্য সংখ্যক লোকই নূহের সাথে ঈমান এনেছিল৷
وَقَالَ ارْكَبُوا فِيهَا بِسْمِ اللَّهِ مَجْرَاهَا وَمُرْسَاهَا ۚ إِنَّ رَبِّي لَغَفُورٌ رَّحِيمٌ
وَهِيَ
تَجْرِي بِهِمْ فِي مَوْجٍ كَالْجِبَالِ وَنَادَىٰ نُوحٌ ابْنَهُ وَكَانَ
فِي مَعْزِلٍ يَا بُنَيَّ ارْكَب مَّعَنَا وَلَا تَكُن مَّعَ
الْكَافِرِينَ
৪২) নৌকা তাদেরকে নিয়ে পর্বত প্রমাণ ঢেউয়ের মধ্য দিয়ে
ভেসে চলতে লাগলো৷ নূহের ছেলে ছিল তাদের থেকে দূরে৷ নূহ চীৎকার করে তাকে
বললো, “ হে আমার পুত্র! আমাদের সাথে আরোহণ করো, কাফেরদের সাথে থেকো না৷”
قَالَ
سَآوِي إِلَىٰ جَبَلٍ يَعْصِمُنِي مِنَ الْمَاءِ ۚ قَالَ لَا عَاصِمَ
الْيَوْمَ مِنْ أَمْرِ اللَّهِ إِلَّا مَن رَّحِمَ ۚ وَحَالَ بَيْنَهُمَا
الْمَوْجُ فَكَانَ مِنَ الْمُغْرَقِينَ
৪৩) সে পালটা জবাব দিল, “আমি
এখনই একটি পাহাড়ে চড়ে বসছি৷ তা আমাকে পানি থেকে বাঁচাবে৷” নূহ বললো, “আজ
আল্লাহর হুকুম থেকে বাঁচাবার কেউ নেই, তবে যার প্রতি আল্লাহ রহমত করেন সে
ছাড়া৷” এমন সময় একটি তরংগ উভয়ের মধ্যে আড়াল হয়ে গেলো এবং সেও নিমজ্জিতদের
দলে শামিল হলো৷
وَقِيلَ
يَا أَرْضُ ابْلَعِي مَاءَكِ وَيَا سَمَاءُ أَقْلِعِي وَغِيضَ الْمَاءُ
وَقُضِيَ الْأَمْرُ وَاسْتَوَتْ عَلَى الْجُودِيِّ ۖ وَقِيلَ بُعْدًا
لِّلْقَوْمِ الظَّالِمِينَ
৪৪) হুকুম হলো, “হে পৃথিবী! তোমার সমস্ত
পানি গিলে ফেলো এবং হে আকাশ৷ থেমে যাও৷” সে মতে পানি ভূগর্ভে বিলীন হয়ে
গেলো, ফায়সালা চূড়ান্ত করে দেয়া হলো এবং নৌকা জুদীর ওপর থেমে গেলো তারপর বলে দেয়া হলো, জালেম সম্প্রদায় দূর হয়ে গেলো!
وَنَادَىٰ نُوحٌ رَّبَّهُ فَقَالَ رَبِّ إِنَّ ابْنِي مِنْ أَهْلِي وَإِنَّ وَعْدَكَ الْحَقُّ وَأَنتَ أَحْكَمُ الْحَاكِمِي
৪৫) নূহ তার রবকে ডাকলো৷ বললো, “ হে আমার রব! আমার ছেলে আমার পরিবারভুক্ত এবং তোমার প্রতিশ্রুতি সত্য আর তুমি সমস্ত শাসকদের মধ্যে সবেচেয়ে বড় ও উত্তম শাসক৷”
قَالَ
يَا نُوحُ إِنَّهُ لَيْسَ مِنْ أَهْلِكَ ۖ إِنَّهُ عَمَلٌ غَيْرُ صَالِحٍ ۖ
فَلَا تَسْأَلْنِ مَا لَيْسَ لَكَ بِهِ عِلْمٌ ۖ إِنِّي أَعِظُكَ أَن
تَكُونَ مِنَ الْجَاهِلِينَ
৪৬) জবাবে বলা হলো, “হে নূহ! সে তোমার পরিবারভুক্ত নয়৷ সে তো অসৎ কর্মপরায়ণ৷ কাজেই
তুমি আমার কাছে এমন বিষয়ের আবেদন করো না যার প্রকৃত তত্ত্ব তোমার জানা
নেই৷ আমি তোমাকে উপদেশ দিচ্ছি, নিজেকে অজ্ঞদের মতো বানিয়ে ফেলো না”৷
قَالَ
رَبِّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ أَنْ أَسْأَلَكَ مَا لَيْسَ لِي بِهِ عِلْمٌ ۖ
وَإِلَّا تَغْفِرْ لِي وَتَرْحَمْنِي أَكُن مِّنَ الْخَاسِرِينَ
৪৭)
নূহ তখনই বললো, “হে আমার রব! যে জিনিসের ব্যাপারে আমার জ্ঞান নেই তা তোমার
কাছে চাইবো- এ থেকে আমি তোমার কাছে পানাহ চাচ্ছি৷ যদি তুমি আমাকে মাফ না
করো এবং আমার প্রতি রহমত না করো তাহলে আমি ধ্বংস হয়ে যাবো৷
قِيلَ
يَا نُوحُ اهْبِطْ بِسَلَامٍ مِّنَّا وَبَرَكَاتٍ عَلَيْكَ وَعَلَىٰ
أُمَمٍ مِّمَّن مَّعَكَ ۚ وَأُمَمٌ سَنُمَتِّعُهُمْ ثُمَّ يَمَسُّهُم
مِّنَّا عَذَابٌ أَلِيمٌ
৪৮) হুকুম হলো, “হে নূহ! নেমে যাও, আমার
পক্ষ থেকে শান্তি ও বরকত তোমার ওপর এবং তোমার সাথে যেসব সম্প্রদায় আছে
তাদের ওপর৷ আবার কিছু সম্প্রদায় এমনও আছে যাদেরকে আমি কিছুকাল জীবন উপকরণ
দান করবো তারপর আমার পক্ষ থেকে তাদেরকে স্পর্শ করবে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি৷”
تِلْكَ
مِنْ أَنبَاءِ الْغَيْبِ نُوحِيهَا إِلَيْكَ ۖ مَا كُنتَ تَعْلَمُهَا
أَنتَ وَلَا قَوْمُكَ مِن قَبْلِ هَٰذَا ۖ فَاصْبِرْ ۖ إِنَّ الْعَاقِبَةَ
لِلْمُتَّقِينَ
৪৯) হে মুহাম্মদ! এসব গায়েবের খবর, যা আমি তোমাকে
অহীর মাধ্যমে জানাচ্ছি৷ এর আগে তুমি এসব জানতে না এবং তোমার কওমও জানতো না৷
কাজেই সবর করো৷ মুত্তাকীদের জন্য রয়েছে শুভ পরিণাম৷