Pages

সুরাহ হুদ

وَإِلَىٰ مَدْيَنَ أَخَاهُمْ شُعَيْبًا ۚ قَالَ يَا قَوْمِ اعْبُدُوا اللَّهَ مَا لَكُم مِّنْ إِلَٰهٍ غَيْرُهُ ۖ وَلَا تَنقُصُوا الْمِكْيَالَ وَالْمِيزَانَ ۚ إِنِّي أَرَاكُم بِخَيْرٍ وَإِنِّي أَخَافُ عَلَيْكُمْ عَذَابَ يَوْمٍ مُّحِيطٍ
﴾৮৪) আর মাদ্‌য়ানবাসীদের কাছে আমি তাদের ভাই শো’আয়েবকে পাঠালাম৷   সে বললো : “হে আমার সম্প্রদায়ের লোকেরা! আল্লাহর বন্দেগী করো৷ তিনি ছাড়া তোমাদের আর কোন ইলাহ নেই৷ আর মাপে ও ওজনে কম করো না৷ আর আমি তোমাদের ভালো অবস্থায় দেখছি কিন্তু আমার ভয় হয় কাল তোমাদের ওপর এমন দিন আসবে যার আযাব সবাইকে ঘেরাও করে ফেলবে৷

وَيَا قَوْمِ أَوْفُوا الْمِكْيَالَ وَالْمِيزَانَ بِالْقِسْطِ ۖ وَلَا تَبْخَسُوا النَّاسَ أَشْيَاءَهُمْ وَلَا تَعْثَوْا فِي الْأَرْضِ مُفْسِدِينَ
৮৫) আর হে আমার সম্প্রদায়ের ভাইয়েরা! যথাযথ ইনসাফ সহকারে মাপো ও ওজন করো এবং লোকদেরকে তাদের প্রাপ্য সামগ্রী কম দিয়ো না৷ আর পৃথিবীতে বিপর্যয় ছড়িয়ে বেড়িয়ো না৷
بَقِيَّتُ اللَّهِ خَيْرٌ لَّكُمْ إِن كُنتُم مُّؤْمِنِينَ ۚ وَمَا أَنَا عَلَيْكُم بِحَفِيظٍ
৮৬) আল্লাহর দেয়া উদ্বৃত্ত তোমাদের জন্য ভালো যদি তোমরা মুমিন হয়ে থাকো৷ মোট কথা আমি তোমাদের ওপর কোন কর্ম তত্ত্বাবধানকারী নই”৯৫
قَالُوا يَا شُعَيْبُ أَصَلَاتُكَ تَأْمُرُكَ أَن نَّتْرُكَ مَا يَعْبُدُ آبَاؤُنَا أَوْ أَن نَّفْعَلَ فِي أَمْوَالِنَا مَا نَشَاءُ ۖ إِنَّكَ لَأَنتَ الْحَلِيمُ الرَّشِيدُ
৮৭) তারা জবাব দিল : “হে শো’আয়েব! তোমার নামায কি তোমাকে একথা শেখায় যে,  আমরা এমন সমস্ত মাবুদকে পরিত্যাগ করবো যাদেরকে আমাদের বাপ-দাদারা পূজা করতো ? অথবা নিজেদের ধন-সম্পদ থেকে নিজেদের ইচ্ছা অনুযায়ী খরচ করার ইখতিয়ার আমাদের থাকবে না ?  ব্যস, শুধু তুমিই রয়ে গেছো একমাত্র উচ্চ হৃদয়ের অধিকারী ও সদাচারী!”
قَالَ يَا قَوْمِ أَرَأَيْتُمْ إِن كُنتُ عَلَىٰ بَيِّنَةٍ مِّن رَّبِّي وَرَزَقَنِي مِنْهُ رِزْقًا حَسَنًا ۚ وَمَا أُرِيدُ أَنْ أُخَالِفَكُمْ إِلَىٰ مَا أَنْهَاكُمْ عَنْهُ ۚ إِنْ أُرِيدُ إِلَّا الْإِصْلَاحَ مَا اسْتَطَعْتُ ۚ وَمَا تَوْفِيقِي إِلَّا بِاللَّهِ ۚ عَلَيْهِ تَوَكَّلْتُ وَإِلَيْهِ أُنِيبُ
৮৮) শো’আয়েব বললো : “ভাইয়েরা! তোমরা নিজেরাই ভেবে দেখো, যদি আমি আমার রবের পক্ষ থেকে একটি সুস্পষ্ট সাক্ষের ওপর প্রতিষ্ঠিত থেকে থাকি, তারপর তিনি আমাকে উত্তম রিযিক দান করেন   (তাহলে এরপর আমি তোমাদের গোমরাহী ও হারামখোরীর কাজে তোমাদের সাথে কেমন করে শরীক হতে পারি ?) আর যেসব বিষয় থেকে আমি তোমাদের বিরত রাখতে চাই আমি নিজে কখনো সেগুলোতে লিপ্ত হতে চাই না৷ ৯৯ আমি তো আমার সাধ্য অনুযায়ী সংশোধন করতে চাই৷ যাকিছু আমি করতে চাই তা সবই আল্লাহর তাওফীকের ওপর নির্ভর কর৷ তাঁরি ওপর আমি ভরসা করেছি এবং সব ব্যাপারে তাঁরই দিকে রুজু করি৷
وَيَا قَوْمِ لَا يَجْرِمَنَّكُمْ شِقَاقِي أَن يُصِيبَكُم مِّثْلُ مَا أَصَابَ قَوْمَ نُوحٍ أَوْ قَوْمَ هُودٍ أَوْ قَوْمَ صَالِحٍ ۚ وَمَا قَوْمُ لُوطٍ مِّنكُم بِبَعِيدٍ
৮৯) আর হে আমার সম্প্রদায়ের ভাইয়েরা! আমার বিরুদ্ধে তোমাদের একগুঁয়েমি যেন এমন পর্যায়ে না পৌঁছে যার যে, শেষ পর্যন্ত তোমাদের ওপরও সেই একই আযাব এসে পড়ে, যা এসেছিল নূহ, হূদ বা সালেহের সম্প্রদায়ের ওপর৷ আর লূতের সম্প্রদায় তো তোমাদের থেকে বেশী দূরের নয়৷ 
وَاسْتَغْفِرُوا رَبَّكُمْ ثُمَّ تُوبُوا إِلَيْهِ ۚ إِنَّ رَبِّي رَحِيمٌ وَدُودٌ
৯০) দেখো, নিজেদের রবের কাছে ক্ষমা চাও এবং তাঁর দিকে ফিরে এসো৷ অবশ্যি আমার রব করুণাশীল এবং নিজের সৃষ্টিকে ভালোবাসেন৷”১০১
قَالُوا يَا شُعَيْبُ مَا نَفْقَهُ كَثِيرًا مِّمَّا تَقُولُ وَإِنَّا لَنَرَاكَ فِينَا ضَعِيفًا ۖ وَلَوْلَا رَهْطُكَ لَرَجَمْنَاكَ ۖ وَمَا أَنتَ عَلَيْنَا بِعَزِيزٍ
৯১) তারা জবাব দিল : “হে শোআয়েব! তোমার অনেক কথাই তো আমরা বুঝতে পারি না   আর আমরা দেখছি তুমি আমাদের মধ্যে একজন দুর্বল ব্যক্তি৷ তোমার ভ্রাতৃগোষ্ঠী না থাকলে আমরা কবেই তোমাকে পাথর নিক্ষেপে মেরে ফেলতাম৷ আমাদের ওপর প্রবল হবার মতো ক্ষমতা তোমার নেই৷”
قَالَ يَا قَوْمِ أَرَهْطِي أَعَزُّ عَلَيْكُم مِّنَ اللَّهِ وَاتَّخَذْتُمُوهُ وَرَاءَكُمْ ظِهْرِيًّا ۖ إِنَّ رَبِّي بِمَا تَعْمَلُونَ مُحِيطٌ
৯২) শো’আয়েব বললো : “ভাইয়েরা! আমার ভ্রাতৃজোট কি তোমাদের ওপর আল্লাহর চাইতে প্রবল যে, তোমরা (ভ্রাতৃজোটের ভয় করলে এবং) আল্লাহকে একেবারে পেছনে ঠেলে দিলে ? জেনে রাখো, যাকিছু তোমরা করছো তা আল্লাহর পাকড়াও-এর বাইরে নয়৷
وَيَا قَوْمِ اعْمَلُوا عَلَىٰ مَكَانَتِكُمْ إِنِّي عَامِلٌ ۖ سَوْفَ تَعْلَمُونَ مَن يَأْتِيهِ عَذَابٌ يُخْزِيهِ وَمَنْ هُوَ كَاذِبٌ ۖ وَارْتَقِبُوا إِنِّي مَعَكُمْ رَقِيبٌ
৯৩) হে আমার সম্প্রদায়! তোমরা নিজেদের পথে কাজ করে যাও এবং আমি আমার পথে কাজ করে যেতে থাকবো৷ শিগগীরই তোমরা জানতে পারবে কার ওপর লাঞ্ছনার আযাব আসছে এবং কে মিথ্যুক ? তোমরা প্রতীক্ষা করতে থাকো এবং আমিও তোমাদের সাথে প্রতীক্ষারত রইলাম৷”
وَلَمَّا جَاءَ أَمْرُنَا نَجَّيْنَا شُعَيْبًا وَالَّذِينَ آمَنُوا مَعَهُ بِرَحْمَةٍ مِّنَّا وَأَخَذَتِ الَّذِينَ ظَلَمُوا الصَّيْحَةُ فَأَصْبَحُوا فِي دِيَارِهِمْ جَاثِمِينَ
৯৪) শেষ পর্যন্ত যখন আমার ফায়সালার সময় এসে গেলো তখন আমি নিজের রহমতের সাহায্যে শো’আয়েব ও তার সাথী মুমিনদের উদ্ধার করলাম৷ আর যারা জুলুম করেছিল একটি প্রচণ্ড আওয়াজ তাদেরকে এমনভাবে পাকড়াও করলো যে, নিজেদের আবাসভূমিতেই তারা নির্জীব নিস্পন্দের মতো পড়ে লইলো,
كَأَن لَّمْ يَغْنَوْا فِيهَا ۗ أَلَا بُعْدًا لِّمَدْيَنَ كَمَا بَعِدَتْ ثَمُودُ
৯৫) যেন তারা সেখানে কোনদিন বসবাসই করতো না৷ শোন, মাদয়ানবাসীরাও দূরে নিক্ষিপ্ত হয়েছে যেমন সামূদ নিক্ষিপ্ত হয়েছিল৷